বন্ধুত্বের ফাঁদে ব্ল্যাকমেল, ৯০ হাজার টাকা খুইয়ে সাইবার পুলিশের দ্বারস্থ ডুয়ার্সের গৃহবধূ

 

চিত্র সংগৃহীত, গুগল

সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি:

সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্বের টোপ, তারপর মোটা অঙ্কের আয়ের লোভ দেখিয়ে ধাপে ধাপে ব্ল্যাকমেল—এই প্রতারণার চক্রে পড়ে সর্বস্ব খুইয়ে শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হলেন ডুয়ার্সের ক্রান্তি এলাকার এক গৃহবধূ। সাইবার অপরাধীদের খপ্পরে পড়ে তিনি মোট ৯০ হাজার টাকা হারিয়েছেন বলে অভিযোগ। বর্তমানে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জলপাইগুড়ি সাইবার থানার পুলিশ।

প্রতারিত গৃহবধূর বক্তব্য অনুযায়ী, অবসর সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখার সময় একটি ভিডিওতে ‘বন্ধুত্ব করে টাকা আয়’-এর প্রলোভন দেখে তিনি একটি লিঙ্কে ক্লিক করেন। এরপরই শুরু হয় ভয়েস কল এবং ধীরে ধীরে ভিডিও কল। হিন্দিভাষী এক পুরুষ ভিডিও কলে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং বন্ধুত্বের বিনিময়ে তার অ্যাকাউন্টে ৫০ লক্ষ টাকা পাঠানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই লোভেই ভুল করেছিলেন তিনি—এমনটাই জানালেন ভুক্তভোগী।

কয়েকদিন কথোপকথনের পর আচমকাই ভিডিও কল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ভয়েস কলে তাকে ব্ল্যাকমেল করে বলা হয়, ভিডিও এবং কথোপকথন ভাইরাল করে দেওয়া হবে যদি টাকা না দেওয়া হয়। একা বাড়িতে দুই সন্তান নিয়ে থাকা গৃহবধূ ভয় পেয়ে প্রথমে সাইবার কাফে থেকে টাকা পাঠাতে শুরু করেন। তার দাবি, স্বামী পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে পুনেতে কাজ করেন। তিনি যাওয়ার আগে কিছু টাকা রেখে গিয়েছিলেন। সেই টাকাই ব্যবহার করেন প্রতারকদের দিতে।

৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই প্রতারণা চলেছে ১৩ জুলাই পর্যন্ত। ১০ জুলাই ৪০ হাজার, ১১ জুলাই ৪০ হাজার ও ১৩ জুলাই ১০ হাজার—এই তিন দফায় মোট ৯০ হাজার টাকা তিনি পাঠান। পরে যখন আরও টাকা চাওয়া হয়, তখন গৃহবধূ বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপরেই বিষয়টি স্বামীকে জানান এবং একসঙ্গে পুলিশের শরণাপন্ন হন।

বর্তমানে অভিযোগটি জলপাইগুড়ি সাইবার থানায় নথিভুক্ত হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। সাধারণ নাগরিকদের এই ধরনের ‘বন্ধুত্বের ফাঁদ’ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।

সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন—

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন